প্রসঙ্গ নিদ্রাহীনতা বা ইনসোমনিয়া

এটা খুব কঠিন শব্দ নয় ! আমরা সকলেই জানি, প্রতিদিন রাতে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ঘুমাতে যাওয়ার পরেও অনেক সময় চোখে ঘুম আসে না। ঘুমের জন্য যথেষ্ট পরিমাণ ক্লান্ত অনুভব না করা এই বিরক্তিকর সমস্যা গুলো আমাদের অনেকের মধ্যেই বিদ্যমান। এগুলোই মূলত ইনসোমনিয়ার লক্ষণ।

ইনসোমনিয়া কি?

ইনসোমনিয়া কোন রোগ নয় বরং এটি হচ্ছে একটি অবস্থা। ঘুমাতে পারার অক্ষমতা বা একটা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ঘুমিয়ে থাকতে না পারার অবস্থাকেই ইনসোমনিয়া (Insomnia) বলা হয়। যান্ত্রিক সভ্যতার যুগে এই সমস্যাটা দিন দিন প্রবল থেকে প্রবলতর হয়ে উঠছে। বিভিন্ন কারণে এটা হতে পারে। যেমন – হতাশা, দুশ্চিন্তা, বিষণ্ণতা, খাদ্যাভাস ইত্যাদি…

ইনসোমনিয়া থেকে মুক্তির উপায়

খুব বেশি মাত্রায় ঘুমের সমস্যা নেই, এমন কেউ চাইলে নিচের পদ্ধতিগুলো অনুসরণ করে নিদ্রাহীনতা বা ঘুমের সমস্যা হতে মুক্তি পেতে পারেন :

  • জোর করে জেগে থাকা পরিহার করুনঃ প্রতিদিন কাজ শেষে আমরা যখন রাতের বেলা বিশ্রাম করি তখন লক্ষ্য করে দেখবেন কোন একটা মুহুর্তে খুব অল্প সময়ের জন্য হলেও ঘুম ঘুম ভাব এসে থাকে । অনেকের কাছে বিষয়টা ধরা না পরলেও এটা প্রায় সকলেরই হয় । ঠিক অই মুহুর্তে আমরা জোর করে জেগে থাকার চেস্টা করি , হয়তো হাতের কাজটা শেষ করে ঘুমাবো বলে অই মুহুর্তটিকে আমরা অবহেলা করি , আর এভাবেই ডেকে আনি নিজের ঘুমের সর্বনাশ কারন অই ঘুম ঘুম ভাবটি চলে গেলে আর সারা রাতে ঘুম আসে না ।
  • সকালে বিছানা হতে দ্রুত উঠার চেস্টা করুনঃ এই কৌশলটি অনেকেরই কাজে লাগতে পারে । খুব সকালে ঘুম হতে উঠে যাবেন তাতে যদি ঘুম পরিপুর্ন না হয় তারপরও উঠবেন এবং এই ঘুমটা দুপুরে ঘুমিয়ে রিকভার করার চেস্টা করবেন না । এভাবে কয়েকদিন চেস্টা করলে দেখবেন রাতের বেলা দ্রুত ক্লান্ত হয়ে আপ্নার ঘুম চলে আসবে ।
  • ঘুমানোর নির্দিষ্ট সময় মেনে চলুনঃ প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমাতে যাওয়ার অভ্যাস করুন। দেখবেন একবার অভ্য‍াস হয়ে গেলে নিয়মিত অই সময় আপনার ঘুম চলে আসবে।
  • অহেতুক চিন্তা বা দুঃশ্চিন্তা পরিহার করুনঃ অতিত বর্তমান ভবিষ্যত নিয়ে অহেতুক দুঃশ্চিন্তা করে অনেকে মনের ভেতর অস্থিরতা বাড়ায় আর তখন ঘুম ঘুম ভাবটা চলে যায় । তাই এই ধরনের চিন্তা দিনের বেলা অবসরে করবেন ।
  • বিছানায় মোবাইল ট্যাব ল্যাপটপ চালানো বন্ধ করুনঃ বিছানায় শুয়ে শুয়ে মোবাইল ট্যাব ল্যাপটপ চালানো বন্ধ করতে হবে । ঘুমের সঠিক পরিবেশের জন্য এই বস্তুগুলো রিনাত্বক প্রভাব ফেলে।

ঘুম বিষয় অনেকগুলো অনুযোগ শোনার পর হতে ভাবছিলাম বিষয়টি নিয়ে লিখবো। রাতে ঘুম না আসার আরো অনেক কারণ আছে যা আমরা সকলেই জানি। আমি এমন কারণগুলো উল্লেখ করেছি, যা কিছু মানুষের জান‍া থাকলেও সবাই জানে না। আশা করি সকলের উপকারে লাগবে লেখাটা…

পরিশেষে ঘুমের ব্যায়াম

  • এই পদ্ধতিটি নিজে চর্চা করে দেখতে পারেন বেশিরভাগ মানুষের বেলায় পদ্ধতিটি কার্জকর।
  • মুখ বন্ধ রেখে নাক দিয়ে শ্বাস গ্রহন করুন , ৪ সেকেন্ড এ যে পরিমান বাতাস ফুসফুসে ঢুকে সে পরিমান ঢুকতে দিন ।
  • এবার ৭ সেকেন্ড বাতাসটাকে ফুসফুসে ধরে রাখুন অর্থাৎ দম ছাড়বেন না আবার দম নেবেনও না ।
  • এবার নাক দিয়ে শ্বাস না ছেড়ে বাতাসটা মুখ দিয়ে ছাড়ুন এবং খেয়াল রাখবেন বাতাস ছাড়ার সময়টা যেন আট সেকেন্ড এর কম বা বেশি না হয় ।
  • সহজ করে দিচ্ছি ৪ সেকেন্ড ধরে দম নেয়া বাতাস ৭ সেকেন্ড ধরে রেখে আবার ৮ সেকেন্ড ধরে সময় নিয়ে দম ছেড়ে দিতে হবে ! সেকেন্ড হিসেব করতে মনে মনে ধীরে গতীতে এক দুই তিন চার এভাবে গননা করুন অযথা ঘরির দিকে তাঁকাতে হবে না ।

ইনসোমনিয়া প্রতিকারে লেখাটি কাজে লাগবে বলে আশা করছি। ধন্যবাদ সবাইকে, সেইসাথে প্রজেক্ট ছারপোকাকেও ধন্যবাদ সুন্দর এই প্লাটফর্মটির জন্য !

Leave a Reply