সদ্য কৈশোরে পা রাখা রবিনের স্বপ্ন ছিলো গিটারিস্ট হবার। তৎকালীন বাংলাদেশের কিংবদন্তীতুল্য গিটারিস্ট নয়ন মুন্সি -কে দেখে অনুপ্রাণিত হওয়া ছেলেটা নিজেও হয়ত জানত না, তার জন্ম শুধু গিটারিস্ট হবার জন্যে হয়নি। তার ভিতরে লুকিয়ে আছে গায়ক, সুরকার, গীতিকার সহ সঙ্গীতের এক পরিপূর্ণ প্যাকেজ। একসময় সে হবে বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পীদের একজন। সে হবে একজন আইয়ুব বাচ্চু। যে দেশের গন্ডি পেরিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গীত পৌঁছে দিবে পুরো পৃথিবীর কানে।
রবিন থেকে আইয়ুব বাচ্চু
আইয়ুব বাচ্চুর শুরুটা হয়েছিলো ফিলিংস ব্যান্ডের মাধ্যমে, ১৯৭৮ সালে। দুই বছর পর ফিলিংস ভেঙে গেলে বাচ্চু যোগদান করেন সোলস -এ। প্রায় বছর দশেক পর সোলস থেকে বের হয়ে নিজের ব্যান্ড গঠন করেন আইয়ুব বাচ্চু। ১৯৯১ সালের ৫ এপ্রিলে গঠিত সেই ব্যান্ডের নাম রাখা হয় ‘ইয়েলো রিভার ব্যান্ড’। দেশের বাইরের এক কনসার্টে গিয়ে দেখেন তাদের ব্যান্ডের নাম ভুল করে ‘লিটল রিভার ব্যান্ড’ লিখা হয়েছে। নামটি পছন্দ হওয়াতে এই নামেই গান শুরু করেন তারা। পরবর্তীতে জানা যায় অস্ট্রেলিয়ান একটা রক ব্যান্ডের নাম ‘লিটল রিভার ব্যান্ড’। তাই আবার নাম চেইঞ্জ করা হলো, এবার নাম হলো ‘লাভ রান্স ব্লাইন্ড’ সংক্ষেপে এলআরবি।
এলআরবি গঠিত হবার পরে তাদের প্রথম অ্যালবামের জন্যে এক বছরের মধ্যেই রেডি করে ফেলে ২২টি গান। এক অডিও ক্যাসেটে তো ২২টা গান রেকর্ড করা সম্ভব না। আবার ২২টা গানের কোনোটাই ফেলে দেবার মত নয়। তাই বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মত এলআরবি তাদের দ্বৈত ক্যাসেটের অ্যালবাম প্রকাশ করে। প্রথম ক্যাসেটে ১০ টা গান আর দ্বিতীয় ক্যাসেটে গানের সংখ্যা ১২ টি। ১৯৯২ সালে ব্যান্ডের নামে নাম রাখা LRB নামের সেই অ্যালবাম দিয়েই বাজিমাত করে আইয়ুব বাচ্চু এবং তার ব্যান্ড। তারপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। একের পর এক হিট অ্যালবাম আর অসংখ্য জনপ্রিয় গানের মাধ্যমে শ্রোতাদের হৃদয়ে স্থান করে নেন আইয়ুব বাচ্চু, ইন শর্ট এবি।