শিক্ষকতার ‘উচ্চতর শারীরিক বিজ্ঞান’

একজন ইয়াং স্মার্ট টিচার যখন পড়ানোর নামে অর্থ উপার্জনের ধান্দা খুলে বসে, তখন আমরা টের পাই না। কিন্তু একটি সাধারণ মেয়ে যখন বলে উঠে, ওয়াও ! স্যার কত্ত স্মার্ট !  ঠিক তখনই পাশ থেকে কেউ একজন বলে, আসতাগফিরুল্লাহ ছিহ ! এই মেয়ে এসব বলে কি !

কিন্তু প্রেক্ষিতে ঘুরে দেখা যায়, পাশের যে মানুষটি এই মন্তব্যটা করেছেন, তিনিই ওই মেয়েটার প্রেমের হাবুডুবু খাচ্ছেন !

আমাদের স্টুডেন্টরা এখন ডিজিটালমুখী হয়েছে, কেননা বর্ষীয়ান শিক্ষকের কাছে পড়তে বসলে নাকি পড়া হয় না। পেছন থেকে বাজে কমেন্ট করি আমরাই ! বলি, ওই দ্যাখ কেমন ক্ষ্যাত শিক্ষককে ক্লাস করতে দিয়েছে। সে তো নিজেই কিছু পারবে না, আমাদের কি শিখাবে?

কিন্তু আমি ওভার চ্যালেঞ্জ দিয়ে বললাম যে, ওই ক্ষ্যাত বর্ষীয়ানের মাথায় যা আছে, আমাদের বর্তমান বড় ডিগ্রীধারী স্মার্ট শিক্ষকদের মাথায়ও তা নেই। ক্ষ্যাত বর্ষীয়ান শিক্ষকদেরকে আমাদের অবশ্যই ভাল লাগত, যদি সে বর্তমান স্মার্ট শিক্ষকদের মত ৪৫ মিনিটের ক্লাসে ৩৫ মিনিট ন্যাকামি করতে পারত তাহলে !

একজন শিক্ষক আর ছাত্র-ছাত্রীর সম্পর্ক একটা সময় ছিল পবিত্র সম্পর্কের আবদ্ধ। কিন্তু বর্তমান আমাদের ইয়াং জেনারেশনের টিচাররা পড়া যতটুকু গেলাতে পারে, তারচেয়ে বেশি গেলায় হচ্ছে ক্রাশ ! কেননা স্টুডেন্টের বয়সটাই হচ্ছে এই রকমের, একটু ওভার হাইস্মার্ট কাউকে দেখলেই তাদের চোখ ছানাবড়া হয়ে যায়।

এখনকার সময়ের একটা নির্দিষ্ট সোসাইটির মেয়েরা একটু বিদঘুটে হয়ে গেছে। এরা জন্মের পর চোখ খুলেই দেখেছে টিভি স্ক্রিনে গান চলছে বা দিনশেষে এদের অবসর কাটানোর অনুসঙ্গ হচ্ছে ফেসবুক বা তাহসান-অপুর্বর নাটক। তাই স্বাভাবিকভাবেই এদের মস্তিস্কে এক ধরণের হাওয়া লাগে, যার মাধ্যমে তাদের মস্তিস্কের সেন্ট্রালে সেই নাটকের হ্যান্ডসাম নায়কের টাইপটা বেঁধে যায়, ইনোসেন্ট লুক যে কেউ আসুক না কেনো, তাকে তারা সিরিয়ালে দেখা স্টারদের মত ভেবে নিজেদের প্রত্যেকটা সঞ্চালণ ক্রিয়া সেদিকেই প্রবাহিত করে দেয়।

আমাদের সেই শিক্ষকেরা একটা সময় বুঝতে পারে যে তার পিছনে তথাকথিত সেই ‘ক্রাশের খাওয়া’ মেয়েদের লাইন লেগেছে, তখন সেও অভিনব পদ্ধতিতে তার প্রতি সবাইকে দূর্বল করে তোলার কায়দা চালিয়ে যায়।

প্রতিদিনই টিভি নিউজ অথবা খবরের কাগজ খুললে চোখের সামনে পরে এমন হাজারো লেখা, কিন্তু কে খবর রাখে সেগুলোর ! কার সময় আছে এত সতর্ক থাকার? মস্তিস্কে যে ঘুরে আছে সেই সঞ্চালন ক্রীয়া !

হ্যাঁ, সেই আশি থেকে নব্বই দশকেও এদেশে শিক্ষক ছিলো। তাদের মধ্যেও ছিল নম্রতা, ভদ্রতা। তাদের পড়ানো স্টুডেন্টদের অনেকে এখন বড় বড় স্কুল কলেজ ভার্সিটিতে শিক্ষকতা করছেন। অনেকেই বাংলাদেশের বড় বড় সেক্টরে নেতৃত্ব দিয়েছেন, এবং এখনো দিচ্ছেন। কিন্তু তা‍ঁরা কেউ পড়ানোর নামে কেলেংকারি বাধাননি !

ওই সময় তাদের ঘরে ঘরে হয়তবা এখনকার মত বড় ডিগ্রী ছিলো না। কিন্তু শিক্ষকতা পেশার মহত্বটাকে বজায় রাখার সৎ সাহস ছিল। মানতেই হবে…

(এই প্রতিবেদনটি অভিভাবক কিংবা ছাত্রছাত্রীদের সতর্ক করার জন্য নয়। তাই এখানে সতর্কতামূলক কিছু বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়নি। পোস্টটি লেখা হয়েছে পেশা ও দায়িত্বের প্রতি শ্রদ্ধাহীন কিছু হীনমন্য মানুষের উদ্দেশ্যে।)

Leave a Reply