অমীমাংসিত রহস্যময় ঘটনাগুলো প্রায় সবাইকেই কমবেশ আকর্ষণ করে। আর তাই ভয় পাওয়া সত্ত্বেও মানুষ বরাবরই জানতে আগ্রহী হয় ভূত-প্রেত সম্পর্কে। অশরীরী কোনোকিছুর অস্তিত্ব অনেকে বিশ্বাস করতে না চাইলেও প্রতিনিয়ত সারাবিশ্বেই ঘটছে এমন সব রহস্যময় ঘটনা, যার কোনো ব্যাখ্যা দেয়া সম্ভব হয় না।
বিশ্বে এমন কিছু বিলাসবহুল ও নামকরা হোটেল রয়েছে, যেগুলো নিয়ে প্রচলিত আছে ভূতুড়ে সব কাণ্ডকীর্তি। তেমনই অদ্ভূত ও রহস্যময় কয়েকটি হোটেলের গল্প নিয়ে ছারপোকা ম্যাগাজিনের আজকের এই প্রতিবেদন। চলুন ভূতুড়ে এই হোটেলগুলো সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক…
ক্যাসেল স্টুয়ার্ট : ১৬২৫ সালে স্কটল্যান্ডে এই হোটেলটি তৈরী করেছিলেন চার্লস্ স্টুয়ার্ট নামের এক ভদ্রলোক। তিনি ছিলেন তৎকালীন স্কটল্যান্ডের রানীর দুঃসম্পর্কের এক ভাই। হোটেলটি তৈরীর পর থেকেই নানা রকমের ভৌতিক কাণ্ড ঘটতে থাকে সেখানে। এক পর্যায়ে ক্যাসেলটি বসবাসের প্রায় অযোগ্য হয়ে যাবার উপক্রম হয়।
অনেকেই বিষয়টি পুরোপুরি বিশ্বাস করতে পারেনি। হোটেলের মালিক স্টুয়ার্টও ছিলেন তাদেরই একজন। তিনি ঘোষণা করলেন, যে ব্যক্তি ওই হোটেলে রাত্রিযাপন করে প্রমাণ করতে পারবে যে সেখানে কোনো ভূত-প্রেত নেই, তাকে পুরষ্কৃত করা হবে। সুযোগটা গ্রহন করেন ওই এলাকার ধর্মযাজক রিচার্ডস। পরদিন সকালে ক্যাসেলের ভিতর থেকে তাকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। বিভৎসভাবে বিকৃত করা ছিলো ওই মৃতদেহের চেহারা।
হাওথ্রন হোটেল : আমেরিকার ম্যাসাচুসেটসে অবস্থিত হোটেল দ্যি হাওথ্রনে থেকেছেন অনেক বিখ্যাত মানুষেরা। এমনকি আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ তার স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে গিয়েছিলেন এই হোটেলে।
এই হোটেলটিরও আছে কিছু ভৌতিক ঘটনা ঘটার বদনাম। চোখের সামনে থেকেই রুমের চাবি গায়েব হয়ে যাওয়া, সুইচ স্পর্শ না করা সত্বেও যখন তখন লাইট অন বা অফ হয়ে যাওয়া, সময়ে-অসময়ে পানির ট্যাপ অন হয়ে যাওয়ার মতো ঘটনাগুলো এখানে প্রায়ই দেখা যায়। এই হোটেলের ৬১২ নাম্বার রুমের সামনে অনেকেই একটি নারীর ছায়ামূর্তি দেখতে পেয়েছেন, যার পিছু নিলেই বাতাসে মিলিয়ে যায়। এই হোটেলটিকে আমেরিকার অন্যতম রহস্যময় ও ভৌতিক হোটেল হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
হোটেল রাসেল : অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে অবস্থিত এই হোটেলের ৮ নাম্বার রুম নিয়ে প্রচলিত আছে বেশ কিছু ভৌতিক কাহিনী।
বলা হয়ে থাকে যে এই রুমের ভিতর আটকে আছে কোনো এক নাবিকের আত্মা। হোটেলের কর্মচারীরা নাকি প্রতিরাতেই এই রুম থেকে জোরে জোরে পা ফেলে কারো হাঁটা-চলার শব্দ শুনতে পান। যদিও বহুদিন যাবৎ রুমটি তালাবন্ধ ও পরিত্যাক্ত অবস্থায় আছে।
হোটেল বার্চিয়ান্তি : ইতালির ফ্লোরেন্সে অবস্থিত এই হোটেলটিকে ভূতের হোটেল বলেই অাখ্যায়িত করে থাকেন স্থানীয়রা। কারন এই হোটেলে রাত্রিযাপন করা প্রায় সবাই কোনো না কোনো ভৌতিক অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছেন।
ছোট শিশুর ছায়া, যুবতী নারীর ছায়া, ভোরবেলা অশরীরী ক্লিনার সহ আরো বিভিন্ন ধরনের অস্বাভাবিক জিনিস এই হোটেলে দেখতে পেয়েছেন অনেকেই। এই হোটেলে একবার ইতালীর বিখ্যাত নেতা মুসোলিনী থেকেছিলেন। অনেকে এখানে তার আত্মা দেখতে পেয়েছেন বলেও দাবী করেন।
হোটেল ল্যাংহাম : ১৮৮৫ সালে লন্ডনে তৈরী হওয়া এই হোটেলে বিভিন্ন সময়ে বহু নামীদামী লোক থেকেছেন। পাশাপাশি বেশ কিছু প্রেতাত্মারও নাকি বসবাস রয়েছে এই হোটেলে। এখানকার ৩৩৩ নাম্বার রুমে মহারাণী ভিক্টোরিয়া’র পোষাক পরা এক পুরুষের ছায়া দেখা যায়। তবে এই ছায়ামূর্তি-কে শুধুমাত্র অক্টোবর মাসেই দেখা যায়, বছরের অন্যান্য সময়ে কখনোই দেখা যায় না তাকে।
এই হোটেলের চারতলার একটা জানালায় নাকি প্রায়ই মিলিটারির পোষাক পরা এক যুবককে দেখা যায়। অনেকের ধারনা এটা জার্মান প্রিন্সের আত্মা, যে কি’না প্রথম বিশ্বযুদ্ধের আগে এই জানালা থেকেই লাফ দিয়ে স্যুসাইড করেছিলেন।
সাবধান, হয়ত এই পোস্টটা পড়ার সময়ও আপনার পেছনে কিংবা খাটের নিচে ঘাপটি মেরে মুচকি হাসছে কোনো প্রেতাত্মা ! 🐸