বেবী স্যুপ : চীনের বিখ্যাত মৃত মানবশিশুর স্যুপ

পৃথিবীর সবচেয়ে রহস্যময় দেশগুলোর একটি হচ্ছে চীন। আয়তনে বিশাল হওয়ায় চীনের প্রায় প্রত্যেকটি প্রদেশেই রয়েছে আলাদা আলাদা অদ্ভুত কিছু সংস্কৃতি। গুয়াংডং তেমনই একটি প্রদেশ। কখনো কি ভাবতে পারেন যে, মৃত মানবশিশু কিংবা জীবিত মানবশিশু হত্যা করে সেটাকে স্যুপ বা পুডিং বানিয়ে খাওয়ার কথা? কিন্তু ঠিক তেমনটিই আড়ালে, আবডালে কখনোবা প্রকাশ্যে হয়ে থাকে চীনের গুয়াংডং প্রদেশে।

কি এই বেবী স্যুপ? এটা কেনো খাওয়া হয়? আর কেনোই বা এর উৎপত্তি? চলুন সেই সম্পর্কে অজানা কিছু তথ্য জেনে নেওয়া যাক…

গুয়াংডং এর অবস্থান : চীনের দক্ষিণাংশে গুয়াংডং প্রদেশের অবস্থান। এটি সিচুয়ান ও হেনান প্রদেশের মালিকানা গ্রহন করেছে। চীনের সকল প্রদেশগুলোর মধ্যে গুয়াংডং সবচেয়ে সুস্থিত প্রদেশ। গুয়াংডং এর রাজধানীর নাম হল গুয়াংঝূ। গুয়াংঝু প্রদেশকে চীনের দক্ষিণ অংশের শিল্পের প্রবেশদ্বার হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়।

বেবী স্যুপ কি ?

মৃত কিংবা জীবিত মানবশিশুর দেহ, ভ্রূন ইত্যাদি রান্না করে কিংবা স্যুৃপ আকারে খাওয়া হয় সেটাই মূলত বেবী স্যুপ [Chinese Baby Soup (Fetus)]

এছাড়া অপূর্ণাঙ্গ ভ্রুন বা ফিটাসের স্যুপ, প্লাসেন্টা বা অমরাকে সুস্বাদু খাবার হিসেবে খাওয়া হয়। আবার অনেক ক্ষেত্রে যেমনভাবে আমরা চিকেন দিয়ে তরল পুষ্টিকর পুডিং তৈরি করি, ঠিক সেভাবেই বেবী পুডিং বানিয়ে খাওয়া হয় গুয়াংডং প্রদেশে !

বেবী স্যুপ খাওয়ার কারণ

সেখানকার পুরুষরা তাদের শারীরিক স্বাস্থ্য ও যৌন শক্তি বৃদ্ধির জন্য ভেষজ শিশু স্যুপ (Herbal Baby Soup) খেয়ে থাকে। তাদের ধারনামতে, এতে তাদের যৌনশক্তি,শারীরিক আকর্ষন বৃদ্ধি পায়। কেউ কেউ মনে করেন বেবী স্যুপ তাদের শরীরের অভ্যান্তরীন রোগ জীবানুকে মেরে ফেলে এবং এর ফলে তাদের আয়ু দীর্ঘ হয়। এখানকার এমন কিছু বাসিন্দা রয়েছে যারা কোনারকম সমস্যা ছাড়াই কেবলমাত্র উদরপূর্তির জন্য বেবী স্যুপ খেয়ে থাকেন। গুয়াংডং এর বাসিন্দাদের কাছে মানব ভ্রূণ তথা বেবী স্যুপ খাওয়া নাকি এক ধরণের শিল্প!

বেবী স্যুপ এর উৎপত্তি

বেবী স্যুপের উৎপত্তি হয়েছে মূলত চীনাদের মাত্রাতিরিক্ত স্বাস্থ্যসচেতনতার কারণে। এছাড়া অনেকের মতে, চীন সরকার জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে রাখতে ‘এক সন্তান নীতি’ চালু করেছিল। আর এ হতভাগ্য শিশুগুলো এই নীতিরই নির্মম শিকার। চীনে এক সন্তান নীতি প্রবলভাবে কার্যকর।তারপরও যদি কেউ অনাকাঙ্খিতভাবে গর্ভধারন করে ফেলেন তাহলে গর্ভপাত করানো হয়। কেননা এখানে কোন শিশু যদি ভূমিষ্ঠ হওয়ার আগেই মারা যায় তবে তাতে ২০০০ ইউয়ান খরচ হয়, সেখানে গর্ভপাত করাতে খরচ হয় মাত্র কয়েকশো ইউয়ান। এমনকি গর্ভপাতকৃত মৃত শিশুও বেচাকেনা হয় এখানে।মৃত শিশু বিক্রি করতে চান না, তারা প্লাসেন্টা বা অমরা বিক্রি করতে পারেন ইচ্ছা করলে।

এছাড়া চীনের অধিকাংশ পরিবার মেয়ে সন্তান নয়, ছেলে সন্তান আশা করে। গরীব পরিবারগুলো তাদের মেয়ে শিশুদের বিক্রি করে দেয় অর্থের আশায়। চরম ঘৃণিত “বেবী স্যুপ” এর উদ্ভব এই মানসিকতা থেকেই

তাইওয়ানে মৃত শিশুরা ৭০ মার্কিন ডলারে বিক্রি হয় গ্রিল করা ‘রুচিকর’ খাবার হিসেবে ! আবার অনেক মহিলা যখন জানতে পারে তার পেটে ছেলে নয়, একটি ‘মেয়ে’ শিশু বড় হচ্ছে, তখনই তারা এবোরশনের মাধ্যমে সেই শিশুটিকে হত্যা করে। এরপর হয়ত তারা নিজেরা বাচ্চাটিকে পুঁতে ফেলে, নাহয় হাসপাতালেই বিক্রি করে দেয়, যার মাধ্যমে অন্য কেউ বর্বর পদ্ধতিতে মৃতদেহটিকে স্যুপ বানিয়ে খায় !

আরো পড়ুনঃ