বাংলাদেশের ফেসবুক সেলিব্রেটি যারা…

সেলিব্রেটি বলতে অন্যান্য দেশে সাধারণত মিডিয়া ব্যক্তিত্বদের বুঝানো হলেও বাংলাদেশে সেলিব্রেটি শব্দের সংজ্ঞাটা একটু ভিন্ন। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন কারণে কিছু সংখ্যক মানুষ ফেসবুকে বিখ্যাত হয়েছেন, যাদেরকে ফেসবুক সেলিব্রেটি বলে গণ্য করা হয়। তবে একটা বিষয় উল্লেখ করছি, হাজার হাজার ফলোয়ার থাকলেই আপনি যদি কাউকে ফেসবুক সেলিব্রেটি ভেবে বসে থাকেন, তাহলে ভুল করছেন। এই লেখায় আমরা এমন কিছু মানুষদের নিয়ে কথা বলবো, যারা সত্যিকারের ফেসবুক সেলিব্রেটি ! ব্যক্তিগত, সামাজিক, রাজনৈতিক এমনকি জাতীয় পর্যায়ে তাদের অসম্ভব রকমের ভূমিকা রয়েছে। একজন সাধারণ মানুষ হয়েও যে ‘সাধারণ’ শব্দটির গণ্ডি পেরিয়ে বেশি কিছু হওয়া যায়, লক্ষ লক্ষ মানুষের কাছে শ্রদ্ধার পাত্র হওয়া যায়, তার উদাহরণ হতে পারেন এই ফেসবুক সেলিব্রেটিগণ। চলুন অল্প কথায় তাদের সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক…

বাংলাদেশের ফেসবুক সেলিব্রেটিদের তালিকা ও পরিচয়

১. ডাক্তার আইজু : “ল্যাঞ্জা ইজ ভেরী ডিফিকাল্ট টু হাইড” এই একটা লাইন দিয়েই ডাক্তার আইজুর পরিচয় পাওয়া যায়। ডাক্তার আইজুর সবচেয়ে বড় গুণ যেকোনো কিছুর সমালোচনা করা। ফেসবুকে এমন কোনো সেলিব্রেটি নেই, যাকে নিয়ে আইজু খিস্তি করেননি। একটা সময় গেছে, যখন প্রতিটা দিন প্রতিটা ইস্যু নিয়েই তিনি খোঁচাখুঁচি করে কিছু লেখার চেষ্টা করতেন এবং সফলও হতেন। সম্পূর্ণ ভিন্নধর্মী একটি চরিত্র ডাক্তার আইজু। আর এজন্য তার হেটার্সরাও তাকে পছন্দ করেন। ২০১৩ সালে গণজাগরণ মঞ্চ ও জাতীয় নির্বাচন ইস্যু নিয়ে ফেসবুকে যখন সেলিব্রেটিদের দ্বন্ধ তুমুলে, তখন আইজুর কিছু কর্মকাণ্ডে তাকে নিয়ে সন্দেহ পোষণ করে অমি রহমান পিয়াল তার থেকে আলাদা হয়ে গেলে আইজু একেবারেই একা হয়ে যান। ইমরান এইচ সরকার আইজুর পরিচয় ফাঁস করে বলেন, তার আসল নাম শরিফ আজাদ। এ ঘটনার পর ডাক্তার আইজু ফেসবুক থেকে বিদায় নিয়ে চলে যান। তার সেই বিদায় ফেসবুক ইউজারদের অর্ধেক আনন্দ কমিয়ে দিয়েছিলো। যদিও এর দুবছর পর আইজু আবারো ফিরে আসে। বর্তমান ডাক্তার আইজুর ফলোয়ার সংখ্যা ২২০০০ জন।

২. আরিফ আর হোসাইন : আবেগ ঢেলে মানুষকে ভাসিয়ে দেয়ার কথা তো অনেক শুনেছেন। আবেগ দিয়ে মানুষ এবং মানবসৃষ্ট সমাজব্যবস্থাকে লাইনে আনতে দেখেছেন কখনো? যদি আপনি ২০১২ সাল থেকে আরিফ আর হোসাইনকে নিয়মিত ফলো করেন, তাহলে নিশ্চয়ই বুঝে গেছেন কেনো একথা বলছি। বাকিদের বোঝার কথা নয়। ফেসবুকের সবচেয়ে বড় সেলিব্রেটি হিসেবে পরিচিত এই আরিফ আর হোসাইন। ফেসবুকে বাংলা ফন্টে স্ট্যাটাস লেখা এবং এই লেখালেখির মাধ্যমে সামাজিক সমস্যাগুলোর সমাধান করার মধ্য দিয়ে তিনি ২০১০ সাল থেকে জনপ্রিয়তা পেতে শুরু করেন। তাকে বলা হয় সব ফেসবুক সেলিব্রেটিদের রাজা। তবে আরিফ আর হোসেন কে নিয়েও রয়েছে হাজারো সমালোচনা ও অভিযোগ। সেগুলো সম্পর্কে এই লেখাটি পড়ে নিতে পারেন – “ফেসবুক এবং একজন আরিফ আর হোসাইন…

৩. অমি রহমান পিয়াল : ফেসবুকের প্রথমসারির একজন সেলিব্রেটি অমি পিয়াল। অনেকের কাছে বাঘা পিয়াল বা পিয়াল মামা নামে পরিচিত। আবার তার বিপক্ষের লোকরা তাকে চটি পিয়াল নামেও ডাকেন। অভিযোগ আছে তিনি “যৌবন জ্বালা” নামে একটি চটি ব্লগ চালাতেন। যদিও এর সত্যতা কেউই প্রমাণ করতে পারেনি। তবে এটা সত্য যে, ফেসবুক প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানানোর অবদানটা অমি পিয়ালের, এবং তার হাত ধরেই এর সূচনা। কেউ কখনো এটা অস্বীকার করবে না। তিনি বর্তমানে সুইজারল্যান্ডে বসবাস করছেন। অমি রহমান পিয়ালের ফলোয়ার সংখ্যা ৭২৪৬৮ জন।

৪. আরিফ জেবতিক : দেশের প্রথমসারির সবচেয়ে জনপ্রিয় ব্লগারদের একজন আরিফ জেবতিক একটাসময় সচলায়তন, আমারব্লগ ও সামহোয়্যারইন ব্লগে লেখালেখি করতেন। বর্তমানে তিনি একজন মিডিয়া ব্যক্তিত্ব। শোনা যায়, একসময় নাকি আরিফ জেবতিক ছাত্রদল নেতা ছিলেন। শাহবাগের আন্দোলনের সময় আরিফ জেবতিককে নাস্তিক এবং ধর্মদ্রোহী আখ্যা দিয়ে একটি পত্রিকার প্রথম পাতায় খবর ছাপা হয়েছিলো। দুঃখজনক এ বিষয়টির জন্য তাকে মৃত্যুর হুমকিও পেতে হয়েছে। আরিফ জেবতিক তখন বলেছিলেন, তিনি মোটেই ধর্মবিদ্বেষী নন। ২০১০ সালের বইমেলায় ‘১/১১’র রাতে একুশ নম্বর আঙ্গুল’ নামে তার একটি বই প্রকাশিত হয়, যা বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছিলো। ফেসবুকে আরিফ জেবতিকের বর্তমান ফলোয়ার সংখ্যা ৯৩৯৩৩ জন।

৫. আপেল মাহমুদ : প্রিয়তমা সিরিজ দিয়ে ফেসবুকে ব্যপক জনপ্রিয়তা লাভ করেন। ২০১৩ সাল থেকে ফেসবুকে তার জনপ্রিয়তা শুরু হয়। তাই তাকেও প্রথমসারির সেলিব্রেটিদের একজন হিসেবে মনে করা হয়। তার ক্যারেক্টারটাই এমন, তিনি যদি লেখালেখি নাও করেন, তবুও তাকে সবার ভালো লাগবে।

৬. সিডাটিভ হিপনোটিক্স : আসল নাম তানজির ইসলাম পরাগ । তবে সিডাটিভ হিপনোটিক্স নামেই ফেসবুকে পরিচিত তিনি। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ছোটখাট সামাজিক সমস্যাগুলো নিয়ে ইভেন্ট বানিয়ে বেশ আলোচনায় এসেছেন। এসব ইভেন্ট থেকেই মূলত তার ফলোয়ার বাড়তে শুরু করে। ২০১৩’র পূর্বে কোনো কোনো ইভেন্টের হোস্ট হিসেবে তার সাথে ‘দূর্যোধন দূর্যোধন’ নামে প্রথমসারির আরেকজন সেলিব্রেটির দেখা পাওয়া যেত। যদিও পরবর্তীতে দুইজনকে আর কখনো একসাথে দেখা যায়নি। এবং দুজনের রাজনৈতিক মতাদর্শেও অমিল রয়েছে বলে মনে হয়েছে। তবে লেখালেখির জন্য সিডাটিভের প্রশংসা করতেই হবে। তার লেখার মান অত্যন্ত ভালো। এজন্য তার বিরাট বড় একটি ফ্যানবেজও হয়েছে। বলিউডের গুন্ডে সিনেমায় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে অসম্মান করার বিরুদ্ধে সিডাটিভ হিপনোটিক্স প্রতিবাদ জানিয়ে আরেকবার আলোচনায় এসেছিলেন। যেমন প্রশংসা কুড়িয়েছেন, তেমনি তার বিরুদ্ধে অভিযোগও রয়েছে। তাসপিয়া রাকা নামে এক মেয়ের সাথে প্রেমের অভিনয় করে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। ২০১৪ সালের ২১ জুলাই এক রাজনৈতিক দলের সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্যের কন্যা তাসপিয়া রাকা এ অভিযোগটি তুলেন। পরবর্তীতে কি হয়েছিলো আর জানা যায়নি। তবে এখনো ফেসবুক নিউজফিডে Tanzir Islam Britto নামে সিডাটিভ হিপনোটিক্সের লেখা পাওয়া যায়। তার বর্তমান ফলোয়ার সংখ্যা ১১৪০০০ জন।

৭. দূর্যোধন দূর্যোধন : ফেসবুকের প্রথমসারির সেলিব্রেটিদের একজন এই দূর্যোধন। যদিও বাংলা ব্লগের একজন ব্লগার হিসেবেই দূর্যোধনের আগমণ ঘটেছিলো। তবে পরবর্তীতে ‘দূর্যোধন দূর্যোধন’ নামে ফেসবুকে আইডি খুলে কয়েকটি ইভেন্টের আয়োজন করে সবার নজরে চলে আসেন তিনি। সেখান থেকেই তার আলাদা একটি ফ্যানবেজ তৈরি হয়। সিডাটিভ হিপনোটিক্স এর সাথেও তাকে ইভেন্ট পরিচালনা করতে দেখা যায়। সামাজিক সমস্যা নিয়ে কাজ করা সবচেয়ে বড় ফেসবুক সেলিব্রেটি আরিফ আর হোস‍াইন সেই ইভেন্টটি প্রমোট করলে দূর্যোধন ও সিডাটিভ দুজনই রাতারাতি জনপ্রিয় হয়ে যান। এমনকি ২০১৩ সালে আরেক বিতর্কিত ফেসবুক সেলিব্রেটি কাজী নিপুকে নিয়েও দূর্যোধনকে পোস্ট দিতে দেখা যায়। আবার পরবর্তীতে তাদের প্রত্যেকের মধ্যেই কোনো একটি বিষয় নিয়ে দ্বন্দের সুত্রপাত হয়। ধারণা করা হয়, দূর্যোধনের ‘সরকারী বিরোধী পোস্ট বা স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির সমর্থন’ করার কারণেই তার সঙ্গ সবাই ত্যাগ করে। এরপর থেকে আর ফেসবুকে কখনো এই কয়েকজন সেলিব্রেটিকে একসাথে দেখা যায়নি। সর্বশেষ ২০১৮ সালে তাকে Durzodhon নামে একটি ফেসবুক পেজ পরিচালনা করতে দেখা যায়।

৮. ময়লা বাবা : ফেসবুকের প্রথমসারির একজন ফেসবুক সেলিব্রেটি। লেখালেখির কারণে একদা অত্যন্ত বিখ্যাত ছিলেন। তার আসল নাম পরিচয় কেউই জানেনা। যদিও অনেকেই মনে করেন তার আসল নাম মামুন বিল্লাহ। তবে এর কোনো সঠিক প্রমাণ পাওয়া যায়নি। পাওয়া যাবেও না। কারণ সময়ের সাথে সাথে জনপ্রিয় এই ব্যক্তিটিও নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন অথবা হারিয়ে গেছেন স্রোতের সাথে।

৯. আরিফ আহমেদ : ২০১৩ সালের সবচেয়ে জনপ্রিয় মুখ আরিফ আহমেদ। অভিনেতা ডাঃ এজাজ, স্বাধীন খসরু, ইরেশ যাকের, তাওসিফ মাহবুব, কন্ঠশিল্পী তাহসান ও আইয়ুব বাচ্চু সহ আরো অনেক মিডিয়া ব্যক্তিত্বদেরকে নিয়মিত তার পোস্টে দেখা যেত। ফেসবুকের সবচেয়ে সুশীল সেলিব্রেটিদের একজন হিসেবে পরিচিত ছিলেন তিনি। তার প্রতিটা লেখায় প্রতিদিনের সাদাসিদে জীবনযাপনের চিত্র ফুটে উঠত। শুভ্র সিরিজটি দিয়ে বিশেষভাবে জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। পরবর্তীতে সোহেল নূর নামে এক ব্যক্তি আরিফ আহমেদের পরিচয় ফাঁস করে বলেন, জনপ্রিয় এই সুশীল নিকটির পেছনে থাকা ব্যক্তির নাম কাজী নিপু, যিনি কিনা ততকালীন সময়ের সবচেয়ে সমালোচিত ফেসবুকার।

১০. তানভীর আহমেদ আরজেল : ঢাবির ফলিত পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র এবং অমর একুশে হলের বাসিন্দা তিনি। ২০১২-১৩ সালে ফেসবুকের সবচেয়ে বড় ইসলামিস্ট বা ইসলামিক সেলিব্রেটি হিসেবে পরিচিত ছিলেন আরজেল। ফেসবুকে ইসলাম নিয়ে লেখালেখির কারণে সবাই তাকে সম্মান করত। ইসলামিক লেখক হওয়ার কারণে তার বেশিরভাগ ফলোয়াররাই ছিলো জামাতশিবির সমর্থক। ধর্মান্ধ ও উগ্রধার্মিকরা একটা সময় তাকে পীর মানতে শুরু করলে আরজেল বাধ্য হয়ে ফেসবুক আইডি বন্ধ করে দেন। পরে আবার ফিরেও আসেন। তবে আগের রুপে নয়।

১১. আসিফ মহিউদ্দীন : প্রথমদিকের একজন ফেসবুক সেলিব্রেটি আসিফ মহিউদ্দীন ! বাংলাদেশে ফেসবুকের সবচেয়ে বড় ‘নাস্তিক’ বলে ডাকা হয় তাকে। ইসলাম বিদ্বেষী লেখালেখির কারণে খ্যাতির চেয়ে ঘৃণাই কুড়িয়েছেন বেশি। ফেসবুকে ধর্ম অবমাননাকর পোস্ট দেয়ায় ২০১৫ সালে তিনি প্রাণঘাতী আক্রমণের শিকার হন এবং পরপর দুইবার জেলও খেটেছেন। বর্তমানে জার্মানির বার্লিনে বসবাস করছেন।

১২. মাজহার মিথুন : এই ব্যক্তি নিরবে নিভৃতে থাকেন। একসময় অনেক বড় বড় গল্প লিখতেন। ১৪-১৫ সালে টানা দীর্ঘসময় আইডি ডিএকটিভেট করে ফেসবুক থেকে দুরে ছিলেন। নাহলে আজ তার ফলোয়ার সংখ্যা লাখখানেক ছাড়িয়ে যেত। পাঠকরা বলেন, তার লেখার ভেতর কিছুটা হুমায়ুনের স্বাদ আছে। ফেসবুক সেলিব্রেটিদের মধ্যে সবচেয়ে শান্তশিষ্ট তিনি। বর্তমানে মাজহার মিথুনের ফলোয়ার সংখ্যা ৫৩৩১৪ জন।

১৩. কাজী নিপু : ফেসবুকের সবচেয়ে ব্যতিক্রমী চরিত্র। সারাবছর নানান কারণে আলোচিত এবং সমালোচিত থাকেন। ২০১২-১৩ সালে ফেসবুকে প্রথম নাস্তিকতা বিরোধী কার্যক্রমের মাধ্যমে রাজকীয়ভাবে উত্থান ঘটলেও তার বিরুদ্ধে অভিযোগের শেষ নেই। এসব নিয়ে তাকে কখনো আত্মপক্ষ সমর্থন করে কথা বলতেও দেখা যায়নি। নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে না চাওয়ার মত উদাসীনতার কারণেই জনপ্রিয়তায় ভাটা পরে তার। ফেসবুকের সব সেলিব্রেটিরাই তার সঙ্গে আতাত রেখে চলে বলেও অভিযোগ রয়েছে। আরিফ আহমেদ নামে একটা সময় ফেসবুকের সবচেয়ে বড় ৫ জন সেলিব্রেটিদের একজন ছিলেন তিনি। পরবর্তীতে কাজী নিপু নামে ফিরে আসেন। গোয়ার্তূমি এবং বেয়াদবিপূর্ণ আচার আচরণের কারণে তার ভক্তের চেয়ে হেটার্স সংখ্যাই বেশি। আবার এটাও সত্য যে, বর্তমানে বাংলাদেশের অনলাইনে সবচেয়ে বেশি কপি করা হয় কাজী নিপুর লেখার স্টাইল।

১৪. নীলসালু : ব্লগিং জগত থেকে উঠে আসা একজন জনপ্রিয় ফেসবুক অ্যাক্টিভিস্ট নীলসালু। বাংলা ব্লগের প্রথমসারির জনপ্রিয় একজন ব্লগার হিসেবে সূচনাটা ঘটেছিলো ২০০৮ সালে। সেই থেকে আজো লেখালেখি চালিয়ে যাচ্ছেন। অনেকেই তাকে বিএনপির এক্টিভিস্ট মনে করলেও মাঝে মাঝে তাকে বিএনপি আওয়ামীলীগ দুই দলেরই সমালোচনা করতে দেখা যায়। তিনি মূলত কোনো রাজনৈতিক দলের সমর্থক নন বরং তিনি সমাজের অসঙ্গতিগুলো নিয়েই লেখালেখি করার চেষ্টা করেন। বর্তমানে তার লক্ষাধিক ফলোয়ারের আইডিটি খুব সম্ভবত ডিএকটিভেটেড অবস্থায় রয়েছে। তবে পেজ সক্রিয় রয়েছে।

১৫. কাসাফাদ্দৌজা নোমান : মাজহার মিথুনের বন্ধু কাসাফাদ্দৌজা নোমান। ইনিও প্রথমসারির একজন ফেসবুক সেলিব্রেটি। ফেসবুকেই লেখালেখির সূচনা, এখন নিয়মিত বই লিখেন। ২০১২-১৩ সালে বেশ জনপ্রিয় ছিলেন। কোনো ঝামেলায় নেই। কারো সাতেপাঁচে জড়ান না। তাই আজও তার ইমেজ আগের মতই আছে। অন্যদের মত জনপ্রিয়তায় একটুও ভাটা পরেনি।

১৬. আক্তারুজ্জামান আজাদ : কেউ বলে কবি আজাদ, কেউ বলে কপি আজাদ ! যেই যা বলুক, আজাদ আজাদই। কবিতা লেখার মাধ্যমে ফেসবুকে জনপ্রিয়তা পেয়ে কবি হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করে নিয়েছেন আক্তারুজ্জামান আজাদ।

১৭. রাসয়াত রহমান জিকো : ইদানিং টিকটক ভিডিও বানানোতে ব্যস্ত থাকলেও উনি রাফখাতা নামক বইয়ের লেখক। যথেষ্ট মানুষ হাসাতে পারেন। ফেসবুকের প্রথমসারির ফেসবুক সেলিব্রেটিদের একজন হচ্ছে এই রাসয়াত রহমান জিকো। প্রতিবছর বইমেলায় তার নতুন নতুন বই বের হয়।

১৭. পিনাকি ভট্টাচার্য : তিনি একজন বাম নেতা। গনজাগরণ মঞ্চে যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসি চাইলেও পরবর্তীতে জামায়াত-বিএনপির পক্ষে অবস্থান নিতে দেখা যায়। অনেকে এখন তাকে বিএনপি তথা ডানপন্থীদের ফেসবুক বুদ্ধিজীবী হিসেবে মনে করেন। পিনাকির ফলোয়ার সংখ্যা ১৬৫৩০৯ জন।

১৯. এ কে এম ওয়াহিদুজ্জামান : বিএনপিপন্থী অনলাইন এক্টিভিস্ট। অনেক বছর ধরে অনলাইনে বিএনপিকে সার্ভিস দিয়ে আসছেন। ২০১৩ সালে প্রথম আলোচনায় আসেন। ওয়াহিদুজ্জামানের ফলোয়ার সংখ্যা প্রায় ৭৭ হাজার।

২০. আশরাফ শাফি : ফলোয়ার সংখ্যাটা মাত্র ৮ হাজার হলেও তিনি ফেসবুকের একজন প্রথমসারির পরিচিত মুখ। যথেষ্ট স্মার্ট। শাফি ২০১৩ সালের দিলে বাংলাদেশের প্রথম ‘ভেহিকল এন্টি-থেফট ডিভাইস’ উদ্ভাবন করেন। একসময় টুকটাক লেখালেখি করেছেন। এবং দারুণ গিটার বাজাতেও পারেন। আইয়ুব বাচ্চু মারা যাবার পর আশরাফ শাফি রুপালী গিটার গানটি কভার করেন, যা কিনা অনেকেরই প্রশংসা কুড়িয়েছে।

২১. মহামান্য কহেন (আজম খান) : গনজাগরণ মঞ্চ দিয়ে সামনে আসে। আওয়ামীলীগের এক্টিভিস্ট বলে পরিচিত।

২২. সবাক পাখি (ইবরাহিম খলিল সবাক) : ইনিও গনজাগরণ মঞ্চের সময় সবার সামনে আসেন। সাধারণত সবাক একজন সমালোচক। ফেসবুকে তিনি সবাক পাখি নামে পরিচিত। তার ফলোয়ার সংখ্যা ২২২৫৩ জন।

২৩. মাহমুদুল হক মুন্সি (বাঁধন) : তিনি গনজাগরণ মঞ্চের একজন নেতা। যুদ্ধাপরাধী গোলাম আজমের লাশের কফিনে জুতা ছুঁড়ে মারার মাধ্যমে তিনি ব্যপক পরিচিতি লাভ করেন।

২৪. আশীফ এন্তাজ রবি : ফেসবুক সেলিব্রেটির বাইরেও তার আলাদা পরিচয় হচ্ছে, তিনি এবিসি রেডিওতে প্রোগ্রাম করতেন। বিভিন্ন সময় জাতীয় পত্রিকায় লিখেছেন। সেখান থেকেই তার আলাদা একটি ফ্যানবেজ গড়ে উঠেছে।

২৫. ইমরান এইচ সরকার : পেশায় ছিলেন একজন ডাক্তার। তাকে ব্লগিং জগতে কখনো দেখা না গেলেও শাহবাগ আন্দোলনের সময় ‘ব্লগার এবং অনলাইন অ্যাকটিভিস্ট নেটওয়ার্ক – বোয়ান’ এর আহ্বায়ক এবং গনজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র হিসেবেই তিনি আলোচনায় চলে আসেন। রাতারাতি ফেসবুকে তার ফলোয়ার বেড়ে যায়। এরপর থেকে তিনি রাজনীতি এবং সমাজ সংষ্কার মূলক কাজের সাথেই যুক্ত থাকার চেষ্টা করে আসছেন।

২৬. সাবরিনা সিরাজী তিতির : এখন তো চারপাশে ব্লাডব্যাংকের অভাব নেই। তারপাশে চোখ ঘুরালেই রক্তদানের হাজারটা গ্রুপ পাওয়া যায়। কিন্তু ২০১১-১২ সালের অবস্থাটা কেমন ছিলো জানেন? ফেসবুকে রক্ত লিখে সার্চ দিলে শুধু সাবরিনা সিরাজী তিতিরের নামটাই চলে আসত। এই একটা মানুষ সর্বপ্রথম ফেসবুকে রক্ত সংগ্রহণের কাজ শুরু করেন। তার দেখাদেখি অনেকেই রক্ত নিয়ে কাজ করতে শুরু করে। এছাড়াও সাবরিনা সিরাজী ফেসবুকে লেখালেখির মাধ্যমেও বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন। প্রতিবছর বইমেলায় তিনি বই প্রকাশ করেন। তাঁর কবিতার বিশেষ সুনাম রয়েছে। তিনি বর্তমানে Sabrina Siraji নামে একটি আইডি চালান। ফলোয়ার সংখ্যা ৩৩ হাজারের অধিক।

২৭. একুয়া রেজিয়া : আসল নাম মাহরীন ফেরদৌস সেঁজুতি ! বলা হয়ে থাকে, অন্যান্য সব নারী ফেসবুক সেলিব্রেটিদের মধ্যে একুয়া রেজিয়া’র চিন্তাধারা সবার চেয়ে উচ্চ। তিনি একুয়া রেজিয়া ছদ্মনামে বেশি কয়েকটি বই প্রকাশ করেছেন। বর্তমানে তিনি তার আসল নাম ‘মাহরীন ফেরদৌস’ নামে আইডি চালাচ্ছেন। তার ফলোয়ার সংখ্যা ৪৫০০০।

২৮. দূর্বা জাহান : ২০১৩-১৪ থেকে লেখালেখির মাধ্যমে জনপ্রিয়তা পেয়েছেন। নারী স্বাধীনতা কর্মী হিসেবে পরিচিত তিনি। তার লেখালেখির বেশ কদর রয়েছে। ফেসবুকের নারী সেলিব্রেটিদের মধ্যে প্রথমদিকেই দূর্বার নাম চলে আসে। দূর্বা জাহানের বর্তমান ফলোয়ার সংখ্যা ২০ হাজারের মত।

২৯. ফড়িং ক্যামেলিয়া : মুক্তমনা ব্লগে লেখালেখির মাধ্যমেই মূলত ফড়িং ক্যামেলিয়া ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেন। তার ফলোয়ার সংখ্যা ৬৪৫৭৮ জন।

৩০ সুব্রত শুভ : মুক্তমনা লেখক হিসেবে পরিচিত। লেখালেখির কারণে ২০১৩ সালে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়ে জেলও খেটেছেন। ফেসবুকে এখন ২০ হাজারের অধিক জন ফলোয়ার।

৩১. কবি ও কাব্য (ফজলে এলাহী) : ব্লগ জামানা থেকে শুরু করে ফেসবুক পর্যন্ত বাংলা চলচ্চিত্র নিয়ে লেখালেখির জনক বলা হয় তাকে। মূলত তার মাধ্যমেই সোশ্যাল মিডিয়ায় বাংলা চলচ্চিত্রের আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে।

৩২. শুভ কামাল : ২০১৩ সালে শাহবাগ আন্দোলনের সময় গনজাগরণ মঞ্চের একটি পেজের এডমিন ছিলেন তিনি। সেখান থেকেই মূলত সবার নজরে আসেন। এছাড়াও ২০১২-১৩ সালের দিকে ম্যাঙ্গোপিপল / আমজনতা নামে একটি সংগঠনের সাথেও তিনি যুক্ত ছিলেন। শাহবাগ আন্দোলন চলাকালে ইমরান এইচ সরকার শুভ কামালের ওয়েবসাইট/পেজ হ্যাক করে বলে জানা যায়। শুভ কামালের ফলোয়ার সংখ্যা ১৬,০০০ জন।

৩৩. মাশরুফ হোসাইন : ফেমাস পুলিশ অফিসার। সুপার কপ নামে পরিচিত। স্মার্ট, সুদর্শন এবং একজন বই পড়ুয়া। ফেসবুকে নানান বিষয়ে লেখালেখি করেন। তার সবচেয়ে বড় পরিচয় হচ্ছে, পুলিশের এত বড় পদের একজন কর্মকর্তা হয়েও কখনো ক্ষমতার অপব্যবহার করেন না। সবার সাথেই হাসিখুশি থাকেন। ফেসবুকে তার ফলোয়ার সংখ্যা দেড়লাখের মত।

৩৪. পাভেল বাবু : পাভেল বাবু প্রচেষ্টা ফাউন্ডেশন এর চেয়ারম্যান। ফেসবুকের প্রথমসারির এক্টিভিস্ট এবং একজন অন্যতম জনপ্রিয় সেলিব্রেটি হিসেবে পরিচিত। রক্তদান সহ আরো বিভিন্ন সামাজিক কাজে তিনি সবসময় নিজেকে নিয়োজিত রাখেন। ফেসবুকে মানবিক ইভেন্ট বানিয়ে মানুষের কাছ থেকে ফান্ড রেইজ করে প্রতারণা করা এক সেলিব্রেটিকে হাতেনাতে ধরার মাধ্যমে পাভেল বাবু মানুষকে প্রতারণার হাত থেকে রক্ষা করেন। এছাড়াও বন্যাকবলিত এলাকায় কেউ যাক আর না যাক, সবার আগে পাভেল বাবুকে তার দলবল নিয়ে ছুটে চলে যেতে দেখা যায়। সবমিলিয়ে অসাধারণ একজন মানুষ তিনি।

৩৫. ফারুক ওয়াসিফ : প্রথম আলোর সাংবাদিক এবং রাজনৈতিক সমালোচক। ফেসবুকের মাধ্যমে বিভিন্ন সময় জনপ্রিয় হয়ে ওঠায় তাকেও একজন ফেসবুক সেলিব্রেটি বলে মনে করা হয়। যদিও তিনি খুব একটা আলোচনায় থাকেন না। তার ফলোয়ার সংখ্যা ৭ হাজারের মত।

৩৬. রাজিব হাসান : বর্তমানে প্রথম আলোর সাংবাদিক হিসেবে পরিচিত। তবে উত্থানটা হয়েছে ফেসবুক থেকেই। বেশকিছু বই লিখেছেন। ইদানিং অনেকগুলো নাটকও লিখেছেন।

৩৭. মুশফিকুর রহমান আশিক : ফেসবুক সেলিব্রেটিদের যদি তিনটি প্রজন্মে ভাগ করা হয়, তাহলে দ্বিতীয় প্রজন্মের সেলিব্রেটির কাতারে আসবে মুশফিকুর রহমান আশিক এর নাম। আবেগ, যুক্তি, হাস্যরসকতা দিয়ে সুন্দর সুন্দর গল্প লিখে মানুষের মন জয় করেছেন। কারো সাতেপাঁচে জড়াতে যান না। সব সমস্যা হাসি দিয়ে সমাধানেরই চেষ্টা করেন। খরগোশের মত বড় বড় দুটি দাঁতের কারণে তিনি বিশেষভাবে পরিচিত।

৩৮. সাদাত হোসাইন : অনেক আগে থেকেই সাদাত হোসেন এর এক্টিভিটি দেখা গেলেও তিনি মূলত দ্বিতীয় প্রজন্মের একজন ফেসবুক সেলিব্রেটি। ফেসবুকেই প্রথমে লেখালেখি করতেন। ২০১৩ সালে তিনি ‘বোধ’ নামে একটি শর্টফিল্ম নির্মাণ করেন। ততকালীন ফেসবুকের কিছু অন্যতম জনপ্রিয় মুখ নেয়ামুল, মামুন বিল্লাহ, কাজী নিপু, সময় মাহমুদ ও মিনার হাসান তার শর্টফিল্মটি শেয়ার করার মাধ্যমে সেটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়। সেখান থেকে সাদাতের ফ্যানবেজ বাড়তে থাকে। পাঠক চাহিদার কথা মাথায় রেখে সাদাত কয়েকটি বইও লিখেছেন। স্বল্পদৈর্ঘের টিভি নাটক নির্মাণ করেছেন। এক শ্রেণীর বিশেষ ভক্ত আছে তার। যারা ‘সাদাত’ বলতেই পাগলপ্রায় !

৩৯. রাখী নাহিদ : ফেসবুকের জনপ্রিয় নারী মুখগুলো একজন রাখী নাহিদ। ব্যক্তিগত, সামাজিক, পারিবারিক বিভিন্ন বিষয়গুলো নিয়ে নিজস্ব মতামত লিখে ফেসবুকে পোস্ট দেয়ার মাধ্যমে পাঠকসমাজদের মনে জায়গা করে নিয়েছেন। ভ্রমণবিলাসী মানুষ রাখি নাহিদ ! বিভিন্ন জনপ্রিয় পোর্টালে তার লেখা পাওয়া যায়। রাখী নাহিদের বর্তমান ফলোয়ার ৬৪০০০ এর বেশি।

৪০. সোলায়মান সুখন : পুরো নাম খন্দকার মোহাম্মদ সোলায়মান। ফেসবুকে সোলায়মান সুখন নামেই পরিচিত। মোটিভেশনাল স্পিকার হিসেবে সবাই তাকে চেনেন। একটা সময় ফেসবুকে ব্যক্তিগত হাসির ভিডিওগুলো আপলোড দিতেন। তারপর ফোন এবং নতুন ডিভাইসের রিভিউ করা শুরু করে জনপ্রিয়তা পেলেন। এই জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগিয়েই তিনি সামাজিক সমস্যাগুলোর সমাধানের চেষ্টা করতে শুরু করলেন। সেই থেকে পথচলা চলছেই। অনন্ত জলিলকে নিয়ে সমালোচনা ও ট্রলের বিরুদ্ধে নিজস্ব মতামত তুলে ধরার মাধ্যমেই মূলত তিনি সর্বপ্রথম বড়সড়ভাবে আলোচনায় আসেন। তারপর নিজগুণে এগিয়ে গেছেন। নিজের তরুণ ভক্তদের মোটিভেশন দিয়ে সুপথে চলার স্বপ্ন দেখাচ্ছেন। তাকে নিয়ে সমালোচনারও শেষ নেই। তাহসিনেশন নামে বাংলাদেশের আরেক জনপ্রিয় সেলিব্রেটি ইউটিউবার একটি ভিডিওতে সোলায়মান সুখনকে নিয়ে ব্যাপক অসঙ্গতির কথা তুলে ধরেন। সুখন সেগুলোর উত্তর দেয়ারও চেষ্টা করেছেন। বর্তমানে সুখনের ফলোয়ার সংখ্যা ৫ লাখের মত।

৪১. মৌসুমী মৌ : সময় টেলিভিশনের সংবাদ পাঠিকা। কোটা সংস্কার আন্দোলন এবং নিরাপদ সড়ক আন্দোলনে মূলত তার পরিচিতি বেড়ে যায়। বর্তমান ফলোয়ার সংখ্যা ৫৮০০০ জন।

৪২. আমিনুল ইসলাম : ইনি দেশের বাইরে থাকেন। একাডেমিক বিষয় নিয়ে ফেসবুকে লেখালেখি করেন।

৪৩. মোঃ আসিফ উর রহমান : ফলোয়ার সংখ্যা ৫৭,৬৯৬ জন। ফেসবুকে লেখালেখি করতে করতে লেখক হয়েছেন। কেউ জানেনি নামে একটি বইও লিখেছেন।

৪৪. স্যাম রহমান : ব্লগ জামানায় সানড্যান্স নামে পরিচিত ছিলেন। ফেসবুকে স্যাম রহমান নামে পরিচিত।

৪৪. ওয়ারিশ আজাদ নাফি : ভালো গল্প লিখতে জানেন তিনি। ২০১৫ সালে আবেগী কিছু লেখা উপহার দিয়ে ফেসবুক ইউজারদের মন জয় করে জনপ্রিয় হয়ে যান ওয়ারিশ আজাদ নাফি। যদিও তার এই জনপ্রিয়তায় ভাটা পরতে বেশিদিন সময় লাগেনি। তিনি তার মায়ের অসুস্থতার কথা বলে সবার সহযোহিতা চেয়ে একটি ইভেন্ট করেন। পরবর্তীতে অভিযোগ উঠে এই ইভেন্টটির আসল উদ্দেশ্য নাকি সত্য নয়। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে ইনবক্সে অনৈতিক ছবি চাওয়া সহ সচিত্র কিছু নারী কেলেঙ্কারির অভিযোগও রয়েছে। সবকিছুকে ছাপিয়ে এখনো তিনি নতুন ফেসবুক ইউজারদের কাছে জনপ্রিয় একজন ব্যক্তি হিসেবে টিকে আছেন। অমি রহমান পিয়ালকে অনুসরণ করে তিনি মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে লেখালেখি করার চেষ্টা করেন।

৪৬. ফারহানা ইন্দ্রা : তিনি একসময়কার আওয়ামীলীগ সমর্থক অনলাইন এক্টিভিস্ট। সাম্প্রতিক তার মেয়ের কভার করা ‘জয় বাংলা জিতবে এবার নৌকা’ গানটি কয়েক লক্ষবার শেয়ার হয়েছে। ফারহানা ইন্দ্রা’র ফলোয়ার সংখ্যা ১১৮৯৯০ জন।

৪৭. ইশতিয়াক আহমেদ : অনেকেই তাকে গরিবের হুমায়ুন বলে ডাকে। তিনি আর্জেন্টিনা এবং মেসি ফ্যান হিসেবে বিশেষভাবে পরিচিত। লেখালেখি করেন, কয়েকটা বইও বের হয়েছে। ইশতিয়াক আহমেদের ফলোয়ার সংখ্যা ৫৫৮৩৯ জন।

৪৮. নাদিয়া ইসলাম : ফেসবুকের একজন নারীবাদী লেখিকা নাদিয়া ইসলাম। তার ফলোয়ার সংখ্যা ৬৮ হাজারের বেশি।

৪৯. কাউসার আলম : স্যাটায়ার লেখক হিসেবে ফেসবুকে মোটামুটি পরিচিত। তার ফলোয়ার সংখ্যা ৪৩৯৬৫ জন।

৫০. শাফিউর রহমান ফারাবী : অনেক পুরনো মুখ। সেই ২০১২-১৩ সাল থেকে তার এক্টিভিটি দেখতে পাওয়া যায়। ফেসবুকে জামাত শিবির ও জঙ্গী গোষ্ঠীদের সমর্থন জানিয়ে লেখালেখি করতেন বলে অভিযোগ আছে। এর আগে অনেকেই তাকে ফলো করত। তাকে দেশের সেরা ইসলামিস্ট সেলিব্রেটি বলেও ভাবা হত। শাহবাগ আন্দোলনের সময় খুন হওয়া নাস্তিক থাবা বাবা ওরফে রাজিব হায়দারের জানাজা পড়ানো ইমামকে হত্যার হুমকি দিলে তার জনপ্রিয়তায় ভাটা পরে। যদিও মনে করা হয় তিনি কখনোই সেলিব্রেটি হওয়ার যোগ্য ছিলেন না। শুরু থেকেই তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আসত তিনি নাকি মানুষের ইনবক্সে মোবাইল রিচার্জ ধার চেয়ে বেড়াতেন।

পরিশেষে কিছু কথা…

চমক হাসান, নাহিদ হেলাল, আয়মান সাদিক সহ আরো কিছু জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব রয়েছেন, তাদের সবার নাম এখানে আসেনি। মোটকথা, জনপ্রিয়তার হিসেব করে কোনো সেলিব্রেটির তালিকা এখানে করা হয়নি। এখানে শুধুমাত্র বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন যুক্তিগত কারণে আলোচিত হওয়া ব্যক্তিদের নাম লেখা হয়েছে, যাদেরকে সত্যিকারের ফেসবুক সেলিব্রেটি হিসেবে গণ্য করা হয়। যারা শুধুমাত্র নিজেদের লেখনী ও গঠনশক্তি দ্বারা নিজেদের বিরাট ফ্যানবেজ তৈরি করেছেন। যাদের হুট করে জনপ্রিয় হয়ে ওঠার পেছনে কোনো কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো স্পন্সরশিপ নিয়ে একটি পয়সাও ব্যয় করেনি।

দুঃখের বিষয় হচ্ছে, এই ফেসবুক সেলিব্রেটিদের অনেকেই এখন ভার্চুয়াল জগত থেকে বিদায় নিয়েছেন, আবার কেউবা সবকিছু ছেড়ে দুরে থাকার চেষ্টা করছেন। আর তাঁদের অনুপস্থিতিতে ভক্তরাও মিস করছেন সেইসব সোনালী দিনগুলো। তাঁরা থাকুক আর না থাকুক, আজীবন ফেসবুকের ইতিহাসে সোনালী অক্ষরে তাঁদের নাম লেখা থাকবে।

এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে সাদিকুল ইসলাম, অচিকীর্ষু লৌকিক, রুয়াল রবিন, আবুল মাল, বাঁশ বাবা রেচড ও সোহাগ আহমেদ সহ আরো বেশকিছু ব্যক্তিরা অটোলাইক সেলিব্রেটি হিসেবে জনপ্রিয় হয়েছিলেন। এই লিস্ট এতটাই বড় যে, সবার নাম উল্লেখ করাও কারো পক্ষে সম্ভব নয়।

বিঃদ্রঃ কিছু মানুষের নাম হয়ত বাদ পরে গেছে। কমেন্টে তাদের নাম লিখে দিতে পারেন। লেখাটি আপডেট করে নেয়া হবে। ধন্যবাদ…