প্লানেট স্যাটার্ন বা শনি গ্রহের পৃষ্ঠে দাঁড়াতে কেমন লাগবে?

পৃথিবীতে আমরা আরামসে হাঁট‍াচলা করছি, দৌড়ঝাঁপ করছি। কিন্তু যদি ‍আমরা পৃথিবীর বাসিন্দা না হয়ে অন্য কোনো গ্রহের বাসিন্দা হতাম। ‍তাহলে কেমন হত? ইতিমধ্যেই আমরা জেনে গেছি, সব গ্রহের গ্রাভিটি এবং ভূপৃষ্ঠ এক নয়। একেক গ্রহেরটা একেক রকম। তাহলে কেমন হবে সেসব গ্রহে দাঁড়াতে ! চলুন একে একে আমাদের সৌরজগতের সবগুলো গ্রহ সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক। এই পর্বে আমরা প্লানেট স্যাটার্ন বা শনি গ্রহ নিয়ে কথা বলবো…

প্লানেট স্যাটার্ন বা শনি গ্রহ

প্ল‍ানেট স্যাটার্ন (Planet Saturn) বা শনি গ্রহ আমাদের সৌরজগতের ৬ষ্ঠ গ্রহ। এট‍াই পৃথিবী থেকে সবচেয়ে দূরের গ্রহ, যা খালি চোখে দেখা যায়। শনি গ্রহ সবচেয়ে বিখ্যাত এর আকর্ষণীয় রিংয়ের জন্য। গ্রহটির চারপাশে একটি গোলাকার বা বলয় বা রিং রয়েছে, যা কিনা সলিড পাথর ও বরফের টুকরো দিয়ে তৈরি ! সূর্যকে একবার ঘুরে আসতে গ্রহটির সময় লাগে ২৯ বছরেরও বেশি ! পৃথিবীর উপগ্রহ একটাই, সেটা হচ্ছে চাঁদ। কিন্তু শনির উপগ্রহের সংখ্যা প্রায় দেড়শ’র বেশি !

Planet Saturn

Planet Saturn

প্লানেট স্যাটার্ন বা শনি গ্রহের পৃষ্ঠে দাঁড়াতে কেমন লাগবে?

শনি গ্রহটিকে সহজভাষায় বলা যায় হাইড্রোজেন ও হিলিয়াম গ্যাসের তৈরি একটি বল ! তাই এর পৃষ্ঠে দাঁড়ানোর কোনো উপায়ও নেই। তবুও যদি কোনোভাবে এর পৃষ্ঠে গিয়ে দাঁড়ানো যায়, সেখানে আপনার ওজন হবে পৃথিবীর চেয়েও কম। তবে এটুকু বলা যায়, ধরুন আপন‍াকে যদি প্লানেট স্যাটার্ন বা শনি গ্রহের উপর ফেলে দেয়া হয়, আপনি খুব আরামসেই আস্তে আস্তে নিচের দিকে পরতে থাকবেন। প্রথমে আপনার ভালে‍াই লাগবে। কিন্তু আপনি যত নিচে যেতে থাকবেন, তাপমাত্রা আর বাতাসের চাপ ততই বাড়তে থাকবে। যত নিচে যেতে থাকবেন, পরিবেশ ততই অন্ধকার হতে থাকবে। প্রথম চারটি বায়ুমন্ডল পার হয়ে আরো নিচে নামার পরই আপনি বিষাক্ত অক্সিজেনে পূর্ণ মেঘ দেখতে পাবেন, যেখানে কিনা প্রতি সেকেন্ডেই উন্মুক্তভাবে বিদ্যুৎ চমকায় বা বজ্রপাত হয় ! যদি এই বিজলি থেকে কোনোভাবে বেঁচে আপনি আরো নিচে যেতে পারেন, তাহলে আপনাকে লিকুইড হাইড্রোজেনের বৃষ্টিতে ভিজতে হবে। এরপর আপনি গিয়ে পরবেন লিকুইড মেটাল হাইড্রোজেনের সাগরে। এই সাগরে ড‍ুবে একদম নীচ পর্যন্ত যেতে আপনার কয়েকসপ্তাহ সময় লেগে যাবে। ডুবতে ডুবতে একটা সময় আপনি শনি গ্রহের একেবারে শেষ পৃষ্ঠে গিয়ে পৌছাবেন, যা কিনা পাথর, লোহা ও বরফের তৈরি। আর এই পুরোটা সময় আপনাকে ১১,০০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার মধ্যে দিয়ে যেতে হবে। অর্থাৎ আপন‍ার এই ভ্রমণ শুরু হবার ‍আগেই শনির বায়ুমন্ডলে শেষ হয়ে যাবে !

তবে হ্যাঁ, আপনি শনি গ্রহের চাঁদ টাইটানে (Saturn’s moon Titan) যেতে পারেন। টাইটান কিন্তু অনেকটা আমাদের পৃথিবীরই মত !

আরো পড়ুনঃ

Leave a Reply